রামকৃষ্ণদেব যার গুরু হন, তার আর কোন কর্ম নেই। কেবল বগল বাজিয়ে দুহাত তুলে প্রাণ ছেড়ে ফুর্তি করাই তার কাজ। তার জন্য তরী ঘাটে বাঁধা। সদা-সর্বদা চোখের উপর সে ঘাটও দেখতে পাচ্ছে, তরীও দেখতে পাচ্ছে, আর কাণ্ডারীকেও দেখতে পাচ্ছে। সে আপনার মনে, মনের মতন খেলে বেড়ায়। মনে জানে যখন মন যাবে, তখন পার হয়ে চলে যাব। সে সংসারে খেলতে ভয় করে না। আগে চোখ মুদে খেলে অনেকবার পড়েছে, এখন চোখ চেয়ে খেলতে শিখেছে। আগে সংসার ধোঁকার টাঁটি ছিল, এখন সংসার তার মজার কুঠী হয়েছে।
তোমরাও তো এখন কিছু বুঝতে পেরেছ। চোখ মেলে দেখ রামকৃষ্ণদেব কি! তিনি শুধু তোমার আমার গুরু নন, তিনি জগদ্গুরু। রামকৃষ্ণদেব চাঁদা মামা - সকলেরই সমান।
পা। এ্যাঁ, রামকৃষ্ণদেব সাক্ষাৎ ঈশ্বর! ঈশ্বর-দর্শনের ফল কি?
ভ। পরমহংসদেবের মহা বিশ্বাসী ভক্ত তোমাদের গিরিশবাবু, যাঁর মতো কবি ও নাট্যকার এখন আর দেখতে পাই না, একখানি গ্রন্থে লিখেছেন, 'কৃষ্ণ-দর্শনের ফল - কৃষ্ণ-দর্শন'। আমিও তাই বুঝি।
পা। এটি বড় আশা-ভরসার কথা। আমরা কি আবার ভগবানকে রামকৃষ্ণরূপে দেখতে পাব?
ভ। নিশ্চয় পাবে। দেখবার জন্য ব্যাকুল হলেই দেখতে পাবে। তাঁর বিগ্রহরূপটিও দেখতে পাবে, তা ছাড়া আরও রূপ আছে, তাও দেখতে পাবে। তিনি রূপের সাগর, তাঁর অনেক রূপ আছে।
পা। আমরা রামকৃষ্ণদেবের মহাসমাধির কথা শুনেছি। তাঁর শ্রীঅস্থি কলসী-মধ্যে যে দিন কাঁকুড়গাছিতে রামবাবুর বাগানে সমাধি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন আমরাও তো ছিলাম। সে দেহ তো নষ্ট হয়ে গেছে, আবার কি করে দেখতে পাব?
ভ। ভাই, তুমি রামকৃষ্ণদেবকে মনুষ্য জ্ঞান করে কথা বলছ।
No comments:
Post a Comment