টাকা হয়ে বেরিয়ে যায়। ঠাকুরের ছাঁচটিও তেমনি। বুঝ ভাই - কি ঠাকুর! কেমন ঠাকুর! আর কোথাকার ঠাকুর! এখন চেয়ে দেখ - কি ঠাকুর দর্শন করেছ, কার মহাপ্রসাদ খেয়েছ! আর সাধনার কি বাকি রেখেছ! ভগবান-দর্শনের জন্য পূর্বজন্মে কতবার মাথা কেটে আহুতি দিয়েছিলে, সেই ফলে এ ঠাকুরের দর্শন পেয়েছ। অবিদ্যার নেশায় অনেক দিন ঘুরেছ; তাঁর দর্শনে নেশা গেছে, কেবল ঘোরটা কিছু আছে; ঠাকুরের লীলাকথা আন্দোলন কর, মনের সাধে ঠাকুরের প্রতিমূর্তি ফুল দিয়ে সাজাও, মনের মতন ভোগ দাও, আর বগল বাজিয়ে নাচো। আর বল - জয় রামকৃষ্ণদেবের জয়। এখন তোমরা মুক্ত-পুরুষ।
পা। মুক্ত হলেম কি করে? যেমন ছিলাম, তেমনি রয়েছি - সেই রোগ, শোক, সংসারে খাটুনি; সেসব রয়েছে, আর ঘুরে বেড়াচ্ছি।
ভ। পূর্বের নেশার ঘোর আছে - তাই এ-রকম দেখাচ্ছে। সেটা কেমন জান? তুমি একটা খুব বলবান ঘোড়ায় চড়েছ, ঘোড়াটা খুব দৌড়াচ্ছে; এমন সময় মনে করলে যে, আমি অমুক জায়গায় একে থামাব; তার মতো তুমি দূর থেকে লাগাম টেনে আসছ; ঘোড়াটাও থেমে থেমে আসছে বটে; কিন্তু যেখানে থামাব বলে মনে করেছিলে, সেখানে থামি থামি করেও আর দশ হাত এগিয়ে পড়ে। তোমারও তাই ঘটেছে, দশ হাতের ভিতরে আছ, কিন্তু থেমে গেছে। এটুকু গেলেই মুক্ত বলে জানতে পারবে।
আর ঐ যে বললে, যেমন সংসারের খাটুনি, তেমনি রয়েছে। এর উত্তরে ঠাকুরের কথা শোন। তিনি বলতেন, কেরানী জেল থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এলে সে কেরানীগিরিই করবে - না ধেই ধেই করে নেচে বেড়াবে? সংসারী লোক ভগবানের কৃপায় মুক্ত হলে সংসারেই থাকে। সংসার কি ভগবান ছাড়া? তাঁরই সংসার।
আর রোগ-শোকের বিষয় - উনুনশালে থাকলেই গায়ে আঁচ লাগে।
No comments:
Post a Comment