উপাধি হতে বিমুক্ত হলেই সে অসীম অনন্ত পরমাত্মাতে লীন হবে। জীবাত্মার উপাধিত্যাগে এ অবস্থাপ্রাপ্তির নাম লয়।
পা। আপনার মতে তবে কি পরমাত্মা নিরাকার ও মনবুদ্ধির অগোচর?
ভ। নিরাকারও বটেন, সাকারও বটেন। আকাশ বাতাস নিরাকার হয়েও যেমন একরকম সাকার, তেমনি পরমাত্মা নিরাকার হয়েও একরকম সাকার অর্থাৎ যে যে আধারে আছেন, সে সে আধারের আকারে পরমাত্মার আকার। মানুষের আধারে মানুষের আকার; গাভীর আধারে গাভীর আকার; গাছের আধারে গাছের আকার। জলের তো কোন আকার নেই, কিন্তু যদি থালায় জল রাখ, তাহলে জল থালার মতো গোল; কলসীতে রাখ, কলসীর মতো; জালায় রাখ, জালার মতো; এখানেও এ ব্যাপার।
মনবুদ্ধির অগোচর হয়েও মনবুদ্ধির গোচর। মনবুদ্ধি যেখানে অশুদ্ধ সেখানে অগোচর; এদিকে শুদ্ধমন শুদ্ধবুদ্ধির গোচর। এ রকম মায়া উপাধি থাকার জন্য তিনি এক অনন্ত হয়েও সান্ত; নির্বিকার হয়েও বিকারযুক্ত, নামহীন হয়েও নামযুক্ত, অর্থাৎ পরমাত্মা হয়েও জীবাত্মা অথচ পার্থক্যভাবে। সেজন্য ভগবান বিশ্বগুরু রামকৃষ্ণদেব এ-সকল বিষয়ে আলোচনার সময় হাসতে হাসতে বলতেন, তাও বটে, তাও বটে আবার এ দুই ছাড়া যা কিছু তাও বটে। ঠাকুর এ ভাবটিতে সকল সন্দেহ থেকে মুক্ত করে দিলেন, সর্বধর্মসমন্বয় করলেন, বিশ্বজনীন ধর্মের বনিয়াদ তুললেন; আবহমানকাল ধর্মে ধর্মে যে একটি বিদ্বেষভাব ছিল, তার মূলোৎপাটন করে রামকৃষ্ণ-অবতারে বিবাদ-বিভঞ্জন নাম ধারণ করলেন। ঠাকুর যা কিছু করলেন বা বললেন তা সব শাস্ত্রীয়, তথাপি তার মধ্যে তাঁর একটি বিশেষ নূতনত্ব আছে। নূতনত্বটি এই - তিনি কিছুই বাদ বা অগ্রাহ্য করলেন না। তাই জীবশিক্ষায় বললেন, সব সত্য,
No comments:
Post a Comment