আর একটি উপমা - যে মূলো খেয়েছে, যার পেটের ভিতর মূলো গজ গজ করছে, সে ঢেঁকুর তুললেই খালি মূলোর গন্ধ উঠবে; তেমনি যাদের মনে প্রাণে পেটে কেবল কাম-কাঞ্চন, যারা সংসার-কীট, নেহাত বদ্ধজীব, তাদের মুখে অবিদ্যার ভাব ভিন্ন আর কি বেরুবে? তাদের কথা শুনলে কানে হাত দিতে হয়; যে স্থানে থাকে, সে স্থান অবিলম্বে পরিত্যাগ করতে হয়। ঈশ্বর আর অবিদ্যামায়া (কাম-কাঞ্চন) এ দুটি জিনিস। এ দুটির মধ্যে যার যেটি ইচ্ছা, সে সেটি পায়। নদী যেমন দুকূল বজায় রাখতে পারে না, তেমনি জীব দুটি একসঙ্গে পায় না। হয় আমিরি নাও, নয় ফকিরি নাও; হয় তেতলা নাও, নয় গাছতলা নাও। কাম-কাঞ্চন যাঁরা প্রাণের সাধে নিয়েছেন, তাঁদের ঈশ্বরের পথে কাঁটা। কাম-কাঞ্চনের একটা নেশা আছে, সেই নেশায় তার দুয়ার-ধরা সেবকদিগকে বুঁদ করে রাখে, মাথাটি তুলতে দেয় না। পানা যেমন জল ঢেকে রাখে, মেঘ যেমন চাঁদকে আড়াল করে রাখে, তেমনি মায়া ঈশ্বরকে লুকিয়ে রাখে। ন্যাবা লাগলে যেমন রোগী খালি হলদে রং দেখে, তেমনি মায়া-ন্যাবা ধরলে কাম-কাঞ্চনের বর্ণ বই আর কিছু দেখতে পাওয়া যায় না।
অবিদ্যামায়ার নেশার আর একটা মহিমা বলি শুন, নেশাটায় পড়লে অমনি বুদ্ধিটিকে গুলিয়ে দিয়ে, জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলিকে বলি দিয়ে মানুষকে অমনি ভেড়া করে ফেলে; তাদিগকে জানতে দেয় না যে, তাদের হদ্দ-মুদ্দ দুর্দশা ও সর্বনাশ হয়েছে। আর একটি কথা, পাগলকে বা ভূতে পাওয়া লোককে যদি জিজ্ঞেস করা যায়, হাঁ গো, তুমি কেমন আছ? সে যেমন বলে, বেশ আছি, তেমনি এরাও বলে, বেশ আছি।
এখন যা জিজ্ঞেস করেছিলে তার উত্তর দিলাম। বেশ বুঝে দেখ, কাম-কাঞ্চনের নেশা না কাটলে ঈশ্বরের পথে গমনের,
No comments:
Post a Comment