Thursday, March 29, 2018

৯৬

তফাত আছে; সেটি উপমা দিয়ে ভেঙে বলি শোন - তুমি তো কাঁচাগোল্লা খেয়েছ আর মিছরিও খেয়েছ; উভয়ই যদিও মিষ্টি, তবু মিছরির সঙ্গে কাঁচাগোল্লার আস্বাদনে যেমন প্রভেদ, তেমনি জ্ঞান-ভক্তিতে প্রভেদ। ভক্তি কাঁচাগোল্লা, জ্ঞান মিছরি।

আর একটি বিষয়ে এ দুয়ের প্রভেদ কতটুকু উপমা দিয়ে বলি শোন - তুমি হুগলী-ব্রীজ বা গঙ্গার পোল দেখেছ? পোলের দুধারে মানুষের গতিবিধির জন্য ফুটপাথ আছে এবং সে ফুটপাথের ধারে শক্ত বেড়া আছে - বেড়াটির উদ্দেশ্য সে ফুটপাথ দিয়ে মানুষ যেভাবেই যাক না কেন, পোল থেকে গঙ্গার জলে পড়ে যাবার সম্ভাবনা নেই। এখানে ভক্তি ঠিক পোলের ফুটপাথের মতো আর জ্ঞানটি ঠিক বেড়ার মতো। ভক্তিপথে যেতে যেতে যদি কারও অসাবধানতাবশতঃ পদস্খলনের অবস্থা ঘটে, জ্ঞান সে অবস্থায় তাকে রক্ষা করে। যেখানে ভক্তি আছে সেখানে জ্ঞানও আছে। এর ঠিক উপমা জ্বলন্ত আগুন। যেখানে আগুন প্রজ্বলিত অবস্থায়, সেখানে পবনের অবস্থিতি থাকবেই থাকবে। ভক্তির সঙ্গে সঙ্গে যে জ্ঞান থাকে, তাকে ভক্তিমিশ্রিত জ্ঞান বলে। আর যেখানে মিছরির অবস্থা, সেখানে নির্মল, কঠোর ও কর্কশ। এবংবিধ জ্ঞানের সঙ্গে ভক্তির উপমা ও তুলনা, যা ঠাকুরের শ্রীমুখে কথিত, তা এই - জ্ঞান পুরুষ আর ভক্তি স্ত্রীলোকের প্রকৃতিসম্পন্ন।

জ্ঞানের দ্বারাও ঈশ্বরলাভ হয় আর ভক্তির দ্বারাও ঈশ্বরলাভ হয় বটে, কিন্তু এর মধ্যে যে একটু বিশেষত্ব আছে, যা ঠাকুর বলতেন, তা এই: একজন বড়লোকের যেমন সদর-বাড়ি ও অন্দর-বাড়ি থাকে; সদর-বাড়িতে সকলেই যেতে পারেন, কিন্তু অন্দর-বাড়িতে কেবল স্ত্রীলোকের প্রবেশাধিকার, পুরুষেরা সেখানে যেতে পারে না, তেমনি ঠিক ঈশ্বরেরও সদর-বাড়ি অন্দর-বাড়ি আছে। জ্ঞান পুরুষজাতি, তার সদর পর্যন্ত যাবার অধিকার। সদরে যদি ঈশ্বর

No comments:

Post a Comment