ভ। আমি তোমার আগ্রহ দেখে বেশ বুঝতে পারছি যে, তোমার উপর রামকৃষ্ণদেবের অপার কৃপা; ভাই, এইমাত্র তোমাকে বললাম যে, ভগবানের অবতারের কোন বিশেষ লক্ষণ নেই, তিনি চিনিয়ে দিলেই তাঁকে চেনা যায়, নচেৎ কার সাধ্য তাঁকে চিনে। রামকৃষ্ণদেবের শ্রীমুখে শুনেছি রাম যখন বনে যান, তখন তাঁকে কেবলমাত্র সাতজন মুনি চিনতে পেরেছিলেন যে, ইনি সেই পূর্ণব্রহ্ম সনাতন, আর অপর সকলে জানতেন, রাম - রাজা দশরথের ছেলে। 'শ্রীকৃষ্ণরহস্য' নামক একখানা প্রাচীন সংস্কৃত নাটক আছে, তাতে দেখা যায় যে, কুরুসভাতে শ্রীকৃষ্ণ ভগবান কিনা, এ সম্বন্ধে অনেক জল্পনা হয়েছিল।
পা। পরমহংসদেব এমন জিনিস, তবে লোকে অনেক বিপরীত কথা বলে কেন? কেউ কেউ বলে তিনি মহাত্মা, কেউ কেউ বলে তিনি একজন সাধু, কেউ বলে সিদ্ধ; আবার কেউ কেউ এমন কথা বলে যে, মুখে বলা যায় না, কানে শুনা যায় না।
ভ। মানুষ আকারে একরকম হয়েও নানা প্রকৃতির। যার যেমন উপলব্ধি, যার যেমন জিনিস ভিতরে আছে, সে সে-রকম কথা বলে। রামকৃষ্ণদেবের একটি গল্প শুন। একজন মহাপুরুষ ভাবে মগ্ন হয়ে বাহ্য-চেতনা হারিয়ে একটি পথের ধারে পড়ে আছেন, এমন সময় একজন সাধু দেখে চিনতে পারলেন যে ইনি মহাপুরুষ। সাধু তাঁর পায়ের ধুলো নিয়ে, তাঁর সেবার জন্য ভাবাবসানের অপেক্ষায় একপাশে বসে রইলেন। তার কিছু সময় পরে একজন মাতাল উপস্থিত, সে টলতে টলতে একবার দাঁড়িয়ে মহাপুরুষকে দেখে বললে - বাঃ, এই যে আমার মতো ভায়ারও ফলার!
ঠাকুরের আর একটি কথা। যে সূতার ব্যবসা করে, সে সূতা দেখলেই কোনটি কোন্ নম্বরের সূতা বলে দিতে পারে। সাধু - সাধু দেখলেই চিনতে পারেন।
No comments:
Post a Comment