ছিল, তাই তৃষ্ণা পাবামাত্র জল খেয়ে গেল। এখানকার লোকেরা বাঁধা আছে, তাই আসতে পারে না।
ঠাকুর এ সম্বন্ধে আর একটি কথা বলতেন, 'লণ্ঠনের নিচে অন্ধকার থাকে, দূরে আলো পড়ে'। সেই রকম মহাপুরুষদের কাছের লোকেরা তাঁকে দেখতে পায় না, দূরের লোকেরা তাঁর ভাবে মুগ্ধ হয়। ঠাকুর আর একটি উপমা দিতেন, বলতেন যে বাজ-বাটুলের বীচি তলায় পড়ে না, যোজনান্তর দূরে ছিটকে পড়ে আর সেখানে গাছ হয়। সেই রকম মহাপুরুষদের ভাব দূরে প্রকাশ পায় ও লোকে আদর করে।
শেষ কথা। জীব চার প্রকারের - নিত্যমুক্ত, মুক্ত, মুমুক্ষু আর বদ্ধ। নিত্যমুক্ত আদতে মায়ার জালেই পড়ে না। মুক্ত জাল কেটে পালায়। মুমুক্ষু কিসে জাল কাটতে পারে, তার চেষ্টা করে আর বদ্ধ জালে পড়েছে, কিন্তু পালাবার মোটেই চেষ্টা নাই, বরং কাদার ভিতর লুকুতে চায়। বদ্ধজীবের লক্ষণ - কাম-কাঞ্চন বই যে আর কোন জিনিস আছে, তা তার আক্কেলেই নেই। অর্থ উপায় করা, খাওয়া মাখা পরা আর বংশবৃদ্ধি করা এটিই সে জীবনের সার উদ্দেশ্য বুঝেছে।
ভূতে যেমন রামনাম শুনতে পারে না, বদ্ধজীবও তেমনি ভগবানের কথায় কানই পাতবে না, বলবে - শুনলে কি হবে? চল, বরং খানিক ইয়ারকি দিয়ে আসি। কেউ বলে - চল, ঘরের কাজকর্ম দেখি, ওসব শোনবার সময় আছে, সে বুড়ো বয়সে। এ যাদের কথা, তারা তো বাপের ঠাকুর; আবার কেউ কেউ এমন কথা বলে যে, শুনলে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়। বলে - 'কৃষ্ণ করেছিলেন তাই লীলা, আর আমরা করলেই বদমায়েসি।' এ-সকল লোকের কাছে যদি স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ চূড়া-ধড়া পরে, হাতে বাঁশী নিয়ে, রাইকে বামে করে এসে দাঁড়ান, তবু বিশ্বাস করবে না, বরং বলবে - 'হ্যাঁ
No comments:
Post a Comment