Thursday, March 29, 2018

প্র। তুই যে বললি, পরমহংস ঠাকুরের সঙ্গ পেয়ে কেশববাবুর মোড় ফিরে গেল, ওটা কি বুঝতে পারলেম না - ভেঙে বল দেখি।

পা। যে লোকটি ঐ কথা বলেছিলেন, আমিও তোর মতো বুঝতে না পেরে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলুম। তিনি যা বললেন, আমিও ভাল বুঝতে পারিনি। বললেন, কেশববাবু আগে নিরাকার নিরাকার করতেন, এখন মা মা করেন। এর মানে - কেশববাবু নিজের ইচ্ছামত একটা পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, পরমহংস ঠাকুর দেখলেন - গন্তব্য স্থানে যেতে হলে এটা ঠিক পথে যাওয়া হচ্ছে না, অমনি কেশববাবুকে ঠিক পথে চালিয়ে দিলেন।

প্র। কথাটা আরো একটু ভেঙে বল দেখি।

পা। শোন, একটা উপমা দিয়ে বলি। যেমন একখানা নৌকা, তার মাঝি নেই, আর খুব ঝড় দিয়েছে। নৌকাটা দিক-বিদিক মানছে না, যে দিকে ঝড়ে নিয়ে যাচ্ছে, সে দিকেই ছুটে যাচ্ছে - তাতে চড়ায় লেগেই হোক, আর শক্ত জায়গায় লেগেই হোক, ধাক্কা খেয়ে ভেঙে ডুবে যাবে, তা নিশ্চয়। এমন সময় যদি একজন পাকা মাঝি সেই নৌকায় টপ্ করে ওঠে, তাহলে মাঝিটি কি করে? মাঝিটি অমনি হালটি ধরে ঠিক পথে চালিয়ে নিয়ে যায়। কেশববাবু খুব অনুরাগী লোক, ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন; ঠাকুর ঠিক পথটি দেখিয়ে দিলেন এবং সেই দিকে চালিয়ে দিলেন।

ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব গলায় বেদনাহেতু প্রায় দশ মাস অন্ন খেতে পারেননি। সেবকরা পানীয়রূপে তরল দ্রব্য খেতে দিতেন। এখন তাও খেতে পারেন না; যা মুখে দেন তার অধিকাংশই মুখ থেকে পড়ে যায়, যৎকিঞ্চিৎ উদরগত হয়; তাই সেবকরা খাওয়াবার জন্য খাবার কিছু বেশি করে করেন। আজ বেদনা বাড়াবাড়ি - নামমাত্র মুখে দিয়েছেন; সম্মুখে পাত্র সব পড়ে আছে।

No comments:

Post a Comment