Thursday, March 29, 2018

৭০

খেলে। আবার ঐ জিনিসই কতকগুলি উপাধি নিয়ে জীবাত্মা হয়ে থাকে। এ-সকল খেলা সব রামকৃষ্ণদেবের গুপ্ত-খেলা। তিনি না দেখালে কারো দেখবার জো নেই। এ তো শুনলে, সব একের খেলা আবার প্রত্যেকটিকেই আলাদা আলাদা দেখতে পাওয়া যায়। দেহীরূপে এক রকম হয়ে আছেন; আবার মনরূপে তারই সঙ্গে আর এক রকম হয়ে রয়েছেন; আবার আর এক রকম হয়ে উভয়কে আলাদা দেখছেন। অদ্ভুত খেলা!

পা। দেহীর সঙ্গে মন কিভাবে আছে? আর মনকে ও দেহীকে পৃথকভাবে যে দেখছে, সে কে?

ভ। মন দেহীর সঙ্গে কেমন ভাবে আছে জান? যেমন দুধের সঙ্গে জল আছে, কি ঘি আছে।

মনকে ও দেহীকে যে ভিন্ন বস্তু বলে দেখে, সে কে জান? সে ঐ দেহী। সে আপনাকে আপনি দেখে। সে এত দিন মনকে সঙ্গে নিয়ে, তার গায়ে কাদা মাখিয়ে খেলছিল; এখন সে খেলা বন্ধ করে গায়ের ময়লা ধুয়ে, মনকে বিমল করে তার ভিতর দিয়ে আপনাকে আপনি দেখছে। এও তার আর একরকম খেলা।

যখন আপনাকে আপনি দেখে, তখন এ দেখাটাকে সাধুলোক আত্মদর্শন বলেন। মনকে সঙ্গে নিয়েই এ দর্শনটি হয়। এখন মনের ইন্দ্রিয়-ঘোড়াগুলো আর নেই। এখানে একটা মজার কথা শোন - এ যে একটা 'আমি' আজীবন 'আমি' 'আমি' বলে তর্জন গর্জন কচ্ছিল, সে আমিটা ঐ সময়ে এমন পালায় যে, তার গন্ধমাত্র থাকে না। ত্রিভুবন খুঁজলেও কোথাও তাকে দেখতে পাবে না।

পা। আপনার কথামত আত্মদর্শন মানে জীবাত্মার স্ব-স্বরূপদর্শন। আচ্ছা, এ দর্শন কি চক্ষুর দ্বারা হয়?

ভ। না, বোধ দ্বারা।

পা। এ দর্শন সাকার কি নিরাকার?

No comments:

Post a Comment