Thursday, March 29, 2018

৮৩

জীবাত্মা সম্বন্ধে রামকৃষ্ণদেব যেমন বুঝাচ্ছেন, দেখাচ্ছেন, আর এক রকমে তোমায় বলি শোন। জীবাত্মা আর কেউ নয়, সেই পরমাত্মাই জীবাত্মা - তফাতের মধ্যে পরমাত্মায় মায়া নেই, জীবাত্মায় মায়া আছে। পরমাত্মাই মায়া উপাধি নিয়ে জীবাত্মা হয়েছেন। পরমাত্মায় মায়া থেকেও নেই - তাঁর মায়া, তাঁর কাছে মায়া নয়। মায়াতে তাঁকে ভুলাতে পারে না। মায়া তাঁতে লাগে না; যেমন সাপের মুখে বিষ আছে, কিন্তু সে বিষে সাপের কোন অপকার হয় না, তেমনি পরমাত্মায় মায়া থেকেও তাঁকে অভিভূত করতে পারে না - জীবাত্মাকে মুগ্ধ করে। পরমাত্মার নির্লিপ্ত ভাব, জীবাত্মার লিপ্তভাব। পরমাত্মা সাক্ষিস্বরূপ, আর জীবাত্মা ফলভোগী। সুখ-দুঃখ, পাপ-পুণ্য, ভাল-মন্দ, জীবাত্মা সব ভোগ করেন, পরমাত্মার কাছে এরা যেতে পারে না - সে কেমন জান? - যেমন ধোঁয়া - ধোঁয়া যদি দেয়ালের গায়ে লাগে, তাহলে দেয়ালে দাগ পড়ে, কিন্তু আকাশে কোন কলঙ্ক বসাতে পারে না। যিনি মায়ামুক্ত পরমাত্মা শিব, তিনিই মায়াযুক্ত জীবাত্মা জীব। এ জীবাত্মা মায়াটি ছেড়ে দিলেই স্ব-স্বরূপ প্রাপ্ত হয়, অর্থাৎ শিবত্ব প্রাপ্ত হয়। জীব শিব হয়ে জন্ম-মরণের ভয় থেকে মুক্ত হয়।

পা। পরমাত্মা সাক্ষিস্বরূপ আর জীবাত্মা ফলভোগী - এ ব্যাপারটি কি রকম?

ভ। ঠাকুর রামকৃষ্ণের শ্রীমুখে এ বিষয়ে যেমন শোনা আছে, তাই বলি, শোন। একদিন ঠাকুর বললেন, "আমার সাধন-ভজনের সময় একদিন আমি পঞ্চবটীর তলায় বসে আছি, হঠাৎ গাছের দিকে লক্ষ্য পড়ে। দেখলাম গাছের একটি ডালে দুটি পাখি রয়েছে; একটি পাখি স্থির, ধীর, নড়ে চড়ে না, যেমন সোলার পাখি, আর একটি ঠিক তার বিপরীত প্রকৃতিযুক্ত - একবার পড়ছে, একবার

No comments:

Post a Comment