Thursday, March 29, 2018

৯৩

ব্যাপার। তিনি এ জিনিসটি পরকে দিয়ে তাকে আপনার করেন। আগে ভক্তি দান, পরে ভক্ত করা। ভক্তি দিয়ে ভক্ত করেন। এ ভক্তিটি ঠাকুর রামকৃষ্ণের নিকট ঠিক কষ্টি-পাথরের মতো। রামকৃষ্ণদেব মনের মতো হলে নিতেন, না হলে ছেড়ে দিতেন। বেনে যেমন যার হাত থেকেই হোক না কেন সোনা হলেই আদর করে, ঠাকুরও তেমনি যার ভক্তি দেখতেন, তাকেই আদর করতেন - তা কে জানে হিন্দু, কে জানে যবন, কে জানে ব্রাহ্মণ, কে জানে খ্রীষ্টান। বেশ্যা লম্পট কি মাতাল এদের মধ্যে যেখানে ঐ জিনিসটি দেখতে পেতেন সেখানেই আদর করতেন।

রামকৃষ্ণদেব যে ভগবান, তাঁর এ ভক্তি-প্রিয়তাই একটা বড় প্রমাণ। যে-কোন অবস্থায়, যে-কোন প্রকৃতির, যে-কোন দেশের, যে-কোন ধর্মের যে কেহ হোক না কেন, তার ভিতরে ভক্তি দেখলেই সে যেন ঠাকুরের আপনার চেয়েও আপনার। ঠাকুরের আর একটি স্বভাব দেখেছ? সেটি যে দেখবে, সে-ই সহজে বুঝতে পারবে যে ঠাকুরই যেন নিজে সেই ভক্তি-প্রিয় ভগবান। যে যে আধারে ভক্তি আছে, সে সে আধারে যেন তিনিই বাস করছেন। একজনের হৃদয়ে ভক্তি আছে, কিন্তু কোন কালে অর্থাৎ রামকৃষ্ণ-অবতারে কখনো ঠাকুরের সঙ্গে দেখা নেই, তাকে কোথাও একবার ঠাকুর দেখতে পেলেই ছুটে গিয়ে ধরতেন আর অল্পকালমধ্যে তাকে আপনার করে নিতেন। রাজ্যের মধ্যে যত দূরে যেখানে যত টেলিগ্রাফ অফিস আছে, সকলেরই সঙ্গে যেমন বড় টেলিগ্রাফ অফিসের যোগ আছে, ঠিক তেমনি আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, যেখানে যে-কোন ভক্তিমান ব্যক্তি আছে, তার সঙ্গে ঠাকুর রামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ যোগ রয়েছে। এ বিষয়টির সাক্ষ্য-প্রমাণের জন্য আমি 'নব্যভারতের' বিংশ খণ্ড, ৪র্থ সংখ্যায় ২১০ পৃষ্ঠায় 'সাধ্বী শবরী'-শীর্ষক লেখাটি পড়ি শোন:

No comments:

Post a Comment