তোমাকে বারবার বলেছি যে, তিনি ঈশ্বর। রামকৃষ্ণরূপ তাঁর বিগ্রহরূপ। তাঁর দেহ পাঞ্চভৌতিক হলেও পাঞ্চভৌতিক নয়। রামকৃষ্ণদেবের দেহ চিন্ময় দেহ। দেহখানি চৈতন্যের জমাটবাঁধা। দেহের অণু-পরমাণু চৈতন্যময়, তা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। তাঁর নরলীলার অবসান হয়েছে বটে, কিন্তু দেহের অবসান হয়নি। বিভুবিলাসের দেহ কখনো নষ্ট হবার নয়। ভগবান ভক্তবাঞ্ছা-কল্পতরু, ভক্তদের বাসনা পূর্ণ করবার জন্য বিগ্রহরূপ ধরেন আর সেই বিগ্রহরূপ তিনি কখনো নষ্ট করেন না ও সেরূপ করবার তাঁর অধিকারও নেই। ভগবানের বিগ্রহরূপ ভগবানের নয়, সেটি - ভক্তদের।
তোমার সন্দেহ-ভঞ্জনের জন্য পরমহংসদেবের একটি ভক্তের কথা বলি, শুন। ভক্তটির নাম শ্রীদুর্গাচরণ নাগ। ইনি ঠাকুরের লীলাবসানে অত্যন্ত অধৈর্য হয়ে পড়েন। অন্ন-জল ত্যাগ। তিন-চারি দিন উপবাসের পর নরেন্দ্রজী খবর পান। নরেন্দ্রজীর অতি কোমল হৃদয়, দুর্গাচরণের বাসায় গিয়ে দেখেন যে, তিনি মৃতপ্রায় পড়ে আছেন। নরেন্দ্রজী তাঁকে খাওয়াবার জন্য অনেক চেষ্টা পান, কিন্তু কৃতকার্য হতে পারলেন না। তখন তিনি বললেন, আমাকে কিছু খেতে দাও। দুর্গাচরণ অমনি দোকান থেকে একঠোঙা খাবার এনে দিলেন। নরেন্দ্রজী যে কচুরিটি, কি গজাটি এক কামড় খেয়ে তাঁর হাতে দেন, তিনি সেইটি খান। নরেন্দ্রজীর উদর পূর্ণ ছিল, কত খাবেন! অবশিষ্ট খাবারগুলি দুর্গাচরণকে খাবার জন্য তাঁর হাতে দিলেন। তিনি 'হায় রে পোড়া কপাল' এ কথাটি বলতে বলতে ঠোঙার খাবারগুলি দ্রুতপদে গঙ্গার জলে ফেলে দিলেন। পরদিন প্রতিবাসীরা অনেক জিদ ও ধরাবাঁধা করে তাঁকে ভাত রান্না করালেন, ভাত যখন ফুটে এল, তখন দুর্গাচরণ একটা চেলা-কাঠ দিয়ে ফুটন্ত ভাতের হাঁড়ি ভেঙে দিলেন, আর এই বলে কাঁদতে লাগলেন, "হায় রে, আমার তেমন ঠাকুর চলে গেলেন, আর আমি ভাত খাব!" ঠাকুর
No comments:
Post a Comment