করে। তখন সে অবস্থাতেও তার ভিতরে 'আমি' থাকে। তারপর ধুনুরী যখন তার যন্ত্রে তারসংযোগ করে টান দিয়ে বাজায়, তখনও ক্ষীণ স্বরে 'আমি' 'আমি' রব করে। সকলের শেষে যখন জানু পেতে বসে যন্ত্রটি ধরে ডান হাতে মুগুর নিয়ে বার বার সেই তাঁতের উপর প্রবলবেগে ঘা মারে, তখন সে সেই চিরকেলে 'আমি' রবটি ছাড়ে আর তুহুঁ তুহুঁ করে। জীবকে এই রকম খাটিয়ে, বাইয়ে, মুখ দিয়ে রক্ত উঠিয়ে, উদ্ব্যস্ত করে ধন জন মান ছাড়িয়ে নিয়ে ক্রমাগত শোকে তাপে যদি জর্জরিত করা হয়, তখন সে আর 'আমি' 'আমি' করে না - বলে, হে ভগবান, 'তুমি' 'তুমি'। জীব এরকম দুর্দশাগ্রস্ত না হলে, ঐ যে বজ্জাত আমি তার ভিতর ঢুকেছে, সে-আমি আর যায় না। এ 'আমি' স্বয়ং মূর্তিমতী মায়া।
পা। আপনি পূর্বে বললেন যে, 'আমি' নামে যে জিনিসটি, সেটি আমি নয়, সেটি তিনি। আবার এ আমিকেই বজ্জাত আমি বলছেন, তাহলে তিনি বজ্জাত হলেন কি করে?
ভ। মায়ার ভয়ঙ্কর খেলা। যতদিন না ঈশ্বরলাভ হয়, ততদিন পাপপুণ্য, ভালমন্দ, সৎ-অসৎ এসব দ্বন্দ্বভাব থাকে। আর ঈশ্বরলাভ হলে মন্দ কি বজ্জাত বলবার কিছু থাকে না। বজ্জাত 'আমি' কতদিন থাকে জান? যতদিন ঐ পাকা 'আমি'-কে না দেখতে পাওয়া যায় ততদিন। তাকে দেখতে পেলে আর বজ্জাত থাকে না। বজ্জাত অবস্থায় 'আমি' অহঙ্কারে পরিপূর্ণ থাকে। এ অহঙ্কার - মায়া। এ অহঙ্কার নষ্ট হলেই ঐ আমিটি 'তুমি' হয়। 'আমি' যখন 'তুমি' হয়, তখন তার আর মায়া-অহঙ্কার থাকে না। 'আমি'-কে চিনতে পারলে অহঙ্কার এমন পালায় যে, আর তাকে ত্রিভুবন খুঁজলেও দেখতে পাওয়া যায় না। রামকৃষ্ণদেব মধ্যে মধ্যে বলতেন, দেখ, 'আমি'-টিকে খুঁজতে গেলাম, কিন্তু কোথাও খুঁজে পেলাম না। সে অদ্বিতীয় সর্বশক্তিমান ভগবান এক হয়েও মায়াকে সঙ্গে নিয়ে
No comments:
Post a Comment