আপনি হবে, তিন টুসকিতে কাজ হবে। এত মেহনত কেন? হাজরা কিন্তু সে কথায় বিশ্বাস করতেন না। তিনি ঠাকুরের কাছে মালাটি চেয়ে নিয়ে আবার জপে বসতেন। হাজরা ঠাকুরের কাছে বহুকাল থেকে জুটেছেন। যখন ঠাকুর দেশে শিহড়ে হৃদয়ের বাড়িতে মধ্যে মধ্যে গিয়ে ৩।৪ মাস ক্রমান্বয়ে থাকতেন সে সময় থেকে হাজরা জুটেছেন। হাজরা রামকৃষ্ণলীলায় একটি বড় মজার জিনিস। ঠাকুর হাজরার সঙ্গে খেলা করে অবিশ্বাসী জীবকে ভূরি ভূরি জ্বলন্ত শিক্ষা দিয়েছেন আর নিজের ভক্তদের একটা রঙ দেখিয়েছেন; তিনি এটা আর বিশ্বাস করতে পারলেন না যে, ঠাকুরের কৃপায় মানুষ বিনা চাষে ঘরে বসে ষোল আনা ফসল পায়। হাজরার সঙ্গে ঠাকুরের খেলাটি শুনলে অতি সহজে বিস্তর রামকৃষ্ণ-মহিমা দেখা যায়, দেখলে অতি বড় অবিশ্বাসী হৃদয়েও ঠাকুরের পাদপদ্মে অটল বিশ্বাস জন্মে; বেদবাক্য অপেক্ষা গুরুবাক্যের গুরুত্ব গভীরত্ব ও সদাফলদায়িনী শক্তি প্রত্যক্ষ করে, আর একটি বিশেষ কথা - ঠাকুরের শরণাপন্ন হলে যে হেলায় ঈশ্বরলাভ হয়, এ বিষয়ে তিলমাত্র সন্দেহ থাকে না।
কর্মে - সাধন-ভজনে যাঁদের বাসনা থাকত, ঠাকুর তাঁদের বাসনা পূরণের জন্য কাকেও বলতেন - তুমি মা-কালীর ঘরে তিন দিন কিছু জপ করো; কাকেও বলতেন - যদি তিন দিন না পার, এক দিন করো; কাকেও বলতেন - তুমি যদি অন্য জপ-ধ্যান করতে না পার, এখানের - (অর্থাৎ ঠাকুরের) স্মরণ-মনন রেখো; কাকেও বলতেন - তোমার কিছু করতে হবে না; এখানে এলে গেলেই হবে - এই আজ এসেছ, আর দুদিন এস; কাকেও বলতেন - তুমি এক দিন মঙ্গলবারে কি শনিবারে এস তাহলেই হবে। কখনো কখনো ভাবাবেশে বলতেন, এখানে এসে সরল প্রাণে যে বলবে, 'হে ঈশ্বর, তোমার তত্ত্ব বা তোমাকে কি করে জানব!' সে নিশ্চয় তাঁর তত্ত্ব পাবে
No comments:
Post a Comment