Thursday, March 29, 2018

৭৮

কাজে নামলেই আবার 'আমি' এসে পড়ে। তবে এখন আর তার কেরামত থাকে না।

এ আত্মদর্শন হলেই দেখতে পাওয়া যায়, সেই এক ভগবান লীলায় সৃষ্টিতে অনন্ত হয়ে রয়েছেন। এ দর্শনের নাম বিরাটরূপদর্শন। তুমি স্মরণ কর, বহু পূর্বে বলেছি, রামকৃষ্ণদেবের বিরাটরূপ আছে - এ তাঁর বিরাটরূপ। যে রামকৃষ্ণদেবকে চৌদ্দপোয়া দেখেছি, সেই তাঁকেই এখন পৃথিবীতে প্রত্যেক বস্তুতে দেখতে পাচ্ছি। এ জগৎ রামকৃষ্ণময়। রামকৃষ্ণ চৌদ্দপোয়াও বটেন, আবার এ বিরাটরূপীও বটেন। পৌত্তলিকতাকে যাঁরা দোষারোপ করেন, পৌত্তলিকতাকে যাঁরা ভ্রান্ত বলে ব্যাখ্যা করেন, এ আত্মদর্শন হলেই তাঁদের অজ্ঞান বেশ দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম প্রথম কেশব সেন ঠাকুরের মা-কালীর উপর ভক্তিবিশ্বাস দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'মহাশয়, আপনার মা-কালী কত বড়?' ঠাকুর উত্তর দেন, 'কেশব, তুমি বিলাত গিয়েছিলে; সাগর দেখেছ তো? আমার মা-কালী তার চেয়েও বড়।' আর একবার সশিষ্য কেশববাবু ঠাকুরের সঙ্গে কোন পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় একজন পথের পার্শ্বস্থিত একটা গাছের ডাল ছেদন করছিল, ঠাকুর তাই দেখে অসহ্য আর্তনাদে ডাক ছেড়ে এই বলে কাঁদতে লাগলেন, "ওগো, আমার মাকে কাটছে।" কেশবকে এতে দেখালেন যে, মা-কালী সৃষ্টিময়ী, ব্রহ্মময়ী; শুধুই যে চৌদ্দপোয়া, তা নয়। আবার এদিকে মা-কালী চৌদ্দপোয়ারূপে কত ঠিক, তার কতই যে দেখালেন, তার সীমা নেই। মা-কালীর নাকের কাছে তুলা ধরেও দেখেছেন ও দেখিয়েছেন যে, মা-কালীর নিঃশ্বাস পড়ছে। একদিনের ঘটনা শোন - ঠাকুর আপনার ছোট খাটে বসে আছেন, অনেক ভক্তও কাছে আছেন। ঠাকুর হঠাৎ পূর্বদিকের দরজা দিয়ে ছুটে বেরিয়ে একেবারে উঠানে হাজির, সেখান থেকে মা-কালীর গোটা মন্দিরটি দেখতে পাওয়া যায়। ঠাকুর মহাভয়ে ব্যাকুল প্রাণে

No comments:

Post a Comment