করতে পারে। লড়াই করতে করতে কখনো হারে, কখনো জিতে। দেহীকে আপনাকে দেখিয়ে দিয়ে তার সঙ্গে লড়াই করে মজা করে।
কারণ-শরীরে শিষ্ট শান্ত হয়ে থাকে, আর দেহীকে ঈশ্বর-দর্শনানন্দ ভোগ করায়। আর মহাকারণে নিজে ঘুমিয়ে জীবকে ঘুম পাড়ায়। এই ঘুমে আপনার রূপ, গুণ, বর্ণ হারায়, আর দেহীকে পরম শান্তির পদে তুলে দেয়।
এটি ভাল করে ভেঙে বলি শোন। সেতারে যেমন ষোলটা পর্দা আছে আর প্রতি পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন সুর ওঠে, তেমনি দেহ-সেতারে সাতটি পর্দা আছে, এ পর্দায় পর্দায় মন নানা সুরে গেয়ে বেড়ায়। পরমহংসদেব বলতেন, প্রথমকার তিনটি পর্দাতে একটি ঘাট হয়েছে। মন যখন ঐ তিন পর্দায় বাজে, তখন দেহীকে একেবারে বেতালা করে। দেহীর লক্ষ্য কেবল আহার, নিদ্রা আর ইন্দ্রিয়সেবা। দেহী কাম-কাঞ্চনকে বুকের পাঁজর মনে করে বেহুঁশ হয়ে থাকে। মন যখন চতুর্থ পর্দায় ওঠে, তখন দেহীর ঘুম ভাঙা ভাঙা হয়। এই ঘুমুচ্ছে, এই ঘুম ভেঙে চমকে উঠছে। এখন সে জানতে পেরেছে যে, কাম-কাঞ্চন ছাড়া আরও মজার জিনিস আছে। এটি চেতনের ঘর। এ জায়গা থেকে দেহী ঈশ্বরের রাজ্যের আভাস পায়। সে আভাস প্রথম প্রথম মিটমিটে আভাস, ক্ষণস্থায়ী চঞ্চল বিদ্যুতের মতো। এখন আর বেহুঁশ হয়ে ঘুমাবার জো নেই। এ অবস্থায় কিছুদিন গেলে, তার গা-টি আরও কিছু গরম হয়। আগে যে ঈশ্বররাজ্যের আভাসটি মিটমিটে ছিল, এখন সেটি আলোর মতো, কিন্তু চঞ্চলতা ও স্থায়িত্বের সম্বন্ধে বড় ইতরবিশেষ হয় না; সেজন্য ভগবানের কথায় একাগ্রমন হয়ে থাকতে পারে না; ভ্যানভেনে মাছির মতো ময়রার সন্দেশের থালাতেও বসে, আবার মেথরের ময়লার ভাঁড়েও বসে। পঞ্চম ঘরে মন উঠলে দেহীর পূর্বস্বভাব প্রায় বদলে যায়। এখন তাকে দেখলে আর আগেকার মানুষ বলে চেনা যায় না।
No comments:
Post a Comment