পরেছি বলে বুঝে রেখেছেন, যে বুদ্ধিতে কাম-কাঞ্চনের ক্রীতদাস হয়ে সমাজের গণ্যমান্য বলে বুঝে রেখেছেন, যে বুদ্ধিতে মনুষ্যত্বের বিনিময়ে পশুত্বে অভিষিক্ত হয়ে আপনাকে গৌরবান্বিত বলে মনে করে রেখেছেন, যে বুদ্ধিতে প্রাণ ভরে একবার মা বলে ডাকতে পারেন না, এমন অসরল, অপবিত্র, কূট, হীনবুদ্ধি নিয়ে, সেই সৎ অপেক্ষা সৎ, শুদ্ধাপেক্ষা শুদ্ধ, পবিত্র অপেক্ষা পবিত্র রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে গেলে কি দেখবেন? দেখবেন, তিনি কৈবর্তের ঠাকুরবাড়ির পূজারী বামুন, একজন পাগল, কতকগুলি বাপে খেদানো ও মায়ে তাড়ানো, সমাজচ্যুত, হেয়, মূর্খ, বকাটে লোকের গুরু, আর শেষে তিনি গলার পীড়ায় দেহ রাখলেন।
আমি মানুষের চোখ-কানের বিকারের কথা বললাম। এখন কিসে বাধা দিয়েছে, তার কথা শুন। একদিন দক্ষিণেশ্বরে গ্রীষ্মকালে পঞ্চবটীর শীতল ছায়ায় রামকৃষ্ণদেবের কাছে তাঁর কতকগুলি ভক্ত বসে আছেন। নানা রকমের ঈশ্বরীয় কথা হচ্ছে, এমন সময় কথায় কথায় এঁড়েদহ, দক্ষিণেশ্বর ও বরাহনগরের লোকদের কথা উঠল। ঠাকুরের উপর এঁদের জটিলা কুটিলার ভাব; তাই একটি ভক্ত কৌতূহলাক্রান্ত হয়ে ঠাকুরকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কত দূর-দূরান্তরের লোক এসে এখানে শান্তিলাভ করে যাচ্ছেন, আর এরা আসেন না কেন?' ঠাকুর মুখে কোন জবাব না দিয়ে, একটি গাই দড়াবাঁধা ছিল, সেই গাইটিকে দেখিয়ে দিলেন। গাইটি গঙ্গার গর্ভে চরায় দড়াবাঁধা ছিল; এখন গঙ্গার জলের দিকে তাকিয়ে ছটফট করছে। গাইটি দেখে কথার জবাব তখন কেউ বুঝতে পারলেন না। রামকৃষ্ণদেবের কি মহিমা! এমন সময় আর চার-পাঁচটি ছাড়া গরু এসে গঙ্গার জলে নেমে গিয়ে ইচ্ছামত জল খেয়ে ডাঙায় উঠল। তখন ঠাকুর বুঝিয়ে দিলেন যে, ঐ গাইটির ভারি তৃষ্ণা পেয়েছে, কিন্তু বাঁধা রয়েছে, তাই এত কাছে জল তবু খেতে পাচ্ছে না; আর ঐ গরুগুলি ছাড়া
No comments:
Post a Comment