নানা নাম হেতু নানা কথা। কারখানাতে কাঠের জিনিসগুলি আকারে, বর্ণে, অবস্থায়, বৃত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন দেখায় বটে, কিন্তু সকলের ভিতরেই সেই এক-কাঠ বা সেই এক-কাঠে তৈরি। এক-কাঠ কারখানাতে নানা রকমারিতে পরিণত হওয়া হেতু যেমন সে এক-কাঠেরই নানা নাম হয়েছে, তেমনি এ এক-রামকৃষ্ণদেব তাঁর লীলা-কারখানাতে স্থূল সূক্ষ্ম নানা ভাবে নানা রূপে পরিণত হওয়া হেতু এ এক-রামকৃষ্ণদেবেরই নানা নাম হয়েছে। সৃষ্টিতে সকলের মধ্যেই এ এক-রামকৃষ্ণদেব বা সকলই এ এক-রামকৃষ্ণ উপাদানে গঠিত।
এখানে একটা গান শোন:
হরে রামকৃষ্ণ বল রামকৃষ্ণ বল মন।
রামকৃষ্ণ আমার ভুবনচন্দ্র আলো করেছেন ভুবন॥
যেই রাম যেই কৃষ্ণ, তিনি এই রামকৃষ্ণ, বিশ্বগুরু জগতের ইষ্ট,
আমি দেখেছি পড়েছি স্পষ্ট শ্রীঅঙ্গে আছে লিখন॥
পেলে পরে দেখবি তাঁরে, সাকারে সে নিরাকারে,
আত্মারূপে সবার ভিতরে, সে চেতনে সেই জড়ে, কারণের মহাকারণ॥
কে রামকৃষ্ণ কোথাকারে, কাজ কি রে তোর সে বিচারে,
তোর বিন্দু-আধার তায় সিন্ধু কি ধরে,
তুই যাবি যদি ভবপারে ভজে নে অভয় চরণ॥
এক পরমাত্মা - তিনি বিরাটে বাহিরে বহুধা হয়েছেন। এ বহুধা এক রকমের নয়, আকারে বরণে গুণে ও প্রকৃতিতে এমনভাবে তিনি অনন্ত হয়েছেন কার সাধ্য বুঝে যে, সেই এক জিনিস ও একের খেলা। এ এক-জিনিসটিকেই আমরা নানা নামে ডাকি। তিনিই পরমাত্মা, তিনিই জীবাত্মা, তিনিই মন ইত্যাদি। তিনিই কখনো ঘোড়া ও কখনো সওয়ার। তোমাদের রঙ্গালয়ে দক্ষযজ্ঞে ভূত সাজে জান তো? যারা সাজে তারা মানুষ, গায়ে মুখে হাতে কালি মেখে ভূত হয়, তেমনি আত্মা গায়ে ময়লা মেখে মন হয়ে মনের খেলা
No comments:
Post a Comment