Thursday, March 29, 2018

৫৩

জন্ম জন্ম এর খেলা ফুরোয় না। একটা দেহে যত পারে খেলে; পরে সেই দেহটা নষ্ট হলে সে আপনার খেলার সামগ্রী লয়ে আবার অন্য একটা টাটকা দেহে ঢোকে। সেই দেহে ফের খেলা করে। মনের একটা ঘুমোবার শয্যা আছে। যতদিন না সেখানে গিয়ে ঘোর সুষুপ্তিতে ঘুমায়, ততদিন খেলার বিরাম নেই। বিছানায় একবার ঘুমুলে আর ওঠে না।

মনের একটা কোন বিশেষ চেহারা কি বিশেষ স্বভাব নেই। যে যে দেহে খেলা করে, সেই সেই দেহের চেহারায় মনের চেহারা, আর তাদের স্বভাবে মনের স্বভাব। এ-সকল দেখেশুনে জিনিসটা কি বুঝে নিতে হয়। মন শরীরের মধ্যে রয়েছে, আপন মনে খেলা করছে, কিন্তু যদি তাকে ধরতে যাও, কি দেখতে যাও, তাহলে অমনি লুকিয়েছে; ত্রিভুবন খুঁজলেও ধরতে কি দেখতে পাবে না। এই রকমে যে সে লুকোয় এও তার খেলা।

মন শরীরের মধ্যে সর্বব্যাপী হয়ে রয়েছে। কেমন তা জান? ঠিক যেন তিলের ভিতর তেল আছে; বলতে পার না যে, অমুক জায়গাটিতে নেই। মন যদি শরীর থেকে চলে যায়, কি শরীরের কোন অংশ থেকে চলে যায়, তাহলে শরীর কি শরীরের সেই অংশ জড় হয়ে যায়।

উইলসনের বাজিতে ঘোড়ার খেলা দেখেছ তো? মনের তেমনি ঘোড়ার খেলা আছে। ঘোড়ারা তার খুব বশ, যা বলে ঘোড়ারা তাই শোনে। এই মনটা যেন ঘোড়াদের প্রাণ। যখন ঘোড়ারা আস্তাবলে থাকে, তখন যেন মরা। আর যেমন মন তাদের পিঠে চড়ে লাগামটি ধরে, অমনি যেন উচ্চৈঃশ্রবা তড়িতের চেয়েও ছোটে। মনের ঘোড়া পাঁচটা, তাদের নাম কি জান? চোখ, কান, নাক, জিব আর ত্বক্। মন এদের পিঠে না চড়লে কেউ কোন কাজ করতে পারে না। চোখ দেখতে পায় না, কান শুনতে পায় না, নাক শুঁকতে

No comments:

Post a Comment