ভ। একরকম দেখায়, সে কি - মুখে বলতে পারলুম না। তবে সে-সময়ের অবস্থার আভাস দিতে পারি। যে লোক এই দর্শন করেন, তখন তাঁর অবস্থা কেমন জান? - যেমন একজন গাঁজায় দম দিয়ে ভোঁ হয়ে বসে আছে। এখানে মনের ঘোড়ার খেলা একদম বন্ধ। সে খেলা যেন কখনো ছিল না। এখানে সুখ-দুঃখ, ভাল-মন্দ কিছুই নেই। এ রাজ্য মহাশান্তির রাজ্য, তা সে যতক্ষণের জন্যেই হোক না।
পা। এ অবস্থায় ভগবানকে কিরূপ দেখায়?
ভ। ঠাকুর বলতেন, একবার রাম হনুমানকে জিজ্ঞেস করেন, হনুমান, তুমি আমাকে কি রকম দেখ? হনু বললেন, হে রাম, তোমাকে কখনো দেখি মহাগ্নি, আর আমি তার একটি ফিনকি; কখনো দেখি তুমি প্রভু, আমি দাস; আবার কখনো দেখি তোমায় আমায় ভেদ নেই। এখানে ভগবানকে মহাগ্নি দেখায়।
পা। জীবন্মুক্ত অবস্থায় মানুষ কিভাবে সংসারে থাকে?
ভ। সে সংসারে ভেসে বেড়ায়, তার ভিতর আর জল ঢোকে না। সে সংসারের সুখ-দুঃখে চঞ্চল হয় না, ধ্রুবতারা-ভগবানের লক্ষ্যটি হারায় না। তার দেহখানা যে দিকেই টলুক না কেন, মনখানা ঠিক একেবারে কম্পাসের কাঁটার মতো ঈশ্বরের পাদপদ্মের দিকে আঁটা থাকে। এ পরম শান্তির অবস্থা। ভগবানের অপার কৃপা না হলে মানুষ এ অবস্থা পায় না। এ জীবন্মুক্তির অবস্থায় 'আমি'-টা একেবারে যায় না, একটুকু থাকে, কিন্তু সে মরা-'আমি' হয়ে থাকে।
পা। মনখানা ষোল আনা রামকৃষ্ণদেবের ভেতরে গেলেই যদি সব লেঠা মিটে যায়, তাহলে কি করে শীঘ্র মনখানা তাঁতে যায়? এর উপায় কি? এখন মনটাকে দেখছি ঠিক মাছির মতো মধুতেও বসছে, আবার ময়লাতেও বসছে।
No comments:
Post a Comment