এ ক্রীড়া, পরমাত্মাতেও তেমনি এ পরিবর্তনশীল সৃষ্ট বস্তুর নিত্য ক্রীড়া।
এখানে জিজ্ঞেস করতে পার - সাগরের জলে বৃষ্টির জল পড়ায় যেমন অগণ্য বিম্ব জন্মায়, এখানে যখন এক অদ্বিতীয় পরমাত্মা বই আর কোন বস্তুর সত্তা নেই, তখন পরমাত্মায় কি দ্রব্য পড়ে এ পরিবর্তনশীল জীব-জগতের সৃষ্টি হলো? এর উত্তর - বৃষ্টির জল আর অপর কিছু নয়, এও সে সাগরের জল; এতদিন মেঘরূপে শূন্যে ছিল, এখন জল হয়ে যার জল তাতে পড়ল; ফল হলো তরঙ্গ ও বিম্বের সৃষ্টি। এখানেও ঠিক তাই - পরমাত্মা থেকে শক্তি, সে শক্তি পরমাত্মাতেই পড়ল, ফল হলো জীব-জগতের সৃষ্টি। সাগরের জলে ও বৃষ্টির জলে যেমন প্রভেদ নেই - উভয়ই জল, তেমনি পরমাত্মায় ও তাঁর শক্তিতে কোন প্রভেদ নেই - উভয়ই সে এক বস্তু, তবে স্থানবিশেষে, ভাববিশেষে ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিহিত হন মাত্র, যথা - ব্রহ্ম, পরমাত্মা, ভগবান, মহামায়া, কালী, কৃষ্ণ, রাম, যীশু, আল্লা ইত্যাদি। এক এক পন্থার লোক এক এক নামে ডাকে। ভক্ত বা সাধক নামের সময়, ভাবের সময় পৃথক বটেন, কিন্তু মূলে সকলেই পরস্পর মিলে যান।
একটি বই আর বস্তু নেই। সেই এক - লীলাতে বহু হয়েছেন; বহুগুলি সেই একেতেই রয়েছেন, পরে সেই একেতেই লীন হবেন। সৃষ্টির বস্তুগুলি চিরকাল হচ্ছেন, কিছুদিন থাকেন, আবার এক সময়ে অন্তর্হিত হন। সৃষ্টির কোন বস্তুর ধ্বংস নেই, কেবল তাদের সময়ে সময়ে গুণান্তর, বর্ণান্তর, আকারান্তর ও লোকান্তর হয় মাত্র, এর জন্য সৃষ্টিকে পরিবর্তনশীল বলে।
ভগবানের কৃপায় যাঁরা এ জ্ঞান লাভ করেছেন, তাঁরা জন্ম-মরণের জন্য উৎফুল্ল বা ত্রস্ত হন না। এ জ্ঞানই ভবসিন্ধুপারের ভেলা; এ জ্ঞানই ত্রিতাপজ্বালার রক্ষাকবচ; এ জ্ঞানের প্রভাবে মানব মুক্ত
No comments:
Post a Comment