গোছা ফুলের মালা দিয়ে সাজান; যতবার সাজঘর থেকে রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করতে আসেন, ততবার ঠাকুরকে প্রণাম করেন, অভিনেত্রীদের ঠাকুরকে ভক্তি করতে বলেন, মধ্যে মধ্যে একসঙ্গে ঠাকুরের গুণের কথা কন। ক্রমে ঠাকুরের উপর ভালবাসা জন্মাল।
এভাবে বার-তের বছর কেটে গেল। এখন তাঁরা দেখলেন, যে ঠাকুরটিকে তাঁরা দেখেছেন, যাঁকে এত ভক্তি করেন, তিনি বড় সোজা ঠাকুর নন, একটা বড় কেউকেটা নন, তাঁর মহিমা দেশবিদেশের লোকদিগকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে; ইংলণ্ড ও আমেরিকা প্রভৃতি বড় বড় জায়গায় রামকৃষ্ণ-নামের পতাকা উড়ছে, দলে দলে সাহেব বিবি ঠাকুরের লীলাস্থল দেখতে আসছে; ইংলণ্ডের সর্বপ্রধান পণ্ডিত তাঁর জীবনী লিখছেন, তাঁর বিষয়ে আন্দোলন করছেন; ঠাকুরের শিষ্যগণ বিশ্ববিজয়ী হয়ে উঠছেন, মানুষ যা করতে পারেনি, সেসব কাজ করছেন। এসকল দেখে শুনে ঠাকুরের লীলাকথা শুনতে তাঁদের বড় ইচ্ছা হলো। একদিন ঠাকুরের শরণাপন্ন একজন ভক্তের সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাঁকে বললেন, 'মশায়, আপনি আমাদিগকে ঠাকুরের কিছু কথা শোনাবেন? আমাদের ঠাকুরের কথা শোনার বড় সাধ হয়েছে।' সে-লোকটি থিয়েটারের লোকেদের মধ্যে রামকৃষ্ণ-ভক্তির স্রোত বইতে দেখে তাঁদের কাছে কেঁদে ফেললেন আর বললেন, "দেখ ভাই, আমি মূর্খ, রামকৃষ্ণদেবের মহল্লীলা আমি কেমন করে বলব? তবে তিনি কৃপা করে যা দেখিয়েছেন, যা শুনিয়েছেন বা জানিয়েছেন তা বলব, তোমরা জিজ্ঞেস কর।"
পা। আপনারা যে রামকৃষ্ণদেবকে ভগবান বলেন, সত্যি কি তিনি ভগবান?
ভক্ত। তুমি আগে একটা কথার জবাব দাও, তারপর আমি বলব। তুমি ভগবান কাকে বল? তোমার ভগবান কিরূপ?
No comments:
Post a Comment