পা। বলেন কি, মশায়? আপনার কথা শুনে গা শিউরে উঠল, আর আমার ভারি কান্না পাচ্ছে। আমি অতি নরাধম, মলিনাত্মা, যাবতীয় অপকর্মে কলঙ্কিত; আমার ছোঁয়া জিনিস কি ভগবান খাবেন?
ভ। আমি আগে ঐ রকম মনে করতাম, কিন্তু রামকৃষ্ণদেবের কৃপায় আমার সে সন্দেহ গেছে, সে সন্দেহ দূর হয়েছে। বলি, তবে শোন, তুমি যেমন তোমার নিজের মধ্যে মলিনতা দেখছ, পাপ কালিমা দেখছ, তেমনি যদি ভগবানের করুণার কিছু আভাস দেখতে পেতে, জানতে পারতে, তাহলে ও-কথা আর মুখে আনতে পারতে না। ভগবান যে করুণার সাগর, দয়ার নিধি। আমি যতই পাপ করি না কেন, সে দয়ার সাগরের কাছে কিছুই নয়। এক দোয়াত কালি যদি তুমি দীঘির জলে ঢেলে দাও, তাহলে কালি কি আর কালি থাকে? উহা দীঘির জলে মিশে দীঘির জল হয়। একবিন্দু শিশির কি সূর্য-ঠাকুরের কাছে যেতে পারে? লোক-লোকান্তর থেকেই শিশির কোথায় উড়ে যায়। যে-ভগবান কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন, যে-ভগবান ভক্তের দায়ে নিজে বাঁধা যান, যে-ভগবান গোপ-বালকের উচ্ছিষ্ট খান, যে-ভগবান ব্রাহ্মণের পদচিহ্ন বক্ষে ধারণ করেন, যে-ভগবান নিজের রক্ত দিয়ে জীব-জগৎকে পালন কচ্ছেন, সেই ভগবান - তুমি কোথায় একটু কি করেছ, এটি খতিয়ে নিয়ে কি বসে আছেন? ছি! ছি! দয়ার সাগর ভগবানে ও-কলঙ্ক দিও না।
তাঁর করুণার সীমার একটুকু আভাস যদি লোকে পেত, তাহলে তাঁকে একটা প্রণামও কেউ করত না, কেউ তাঁকে খাতিরেও আনত না। তাঁর দয়ার পার নেই, কূল-কিনারা নেই। বাপের তুলনায় দেখ না - ছেলের যতই দোষ হোক না কেন, মা বাপ মোটেই গ্রহণ করেন না। আর ভগবান - যিনি জগতের মা-বাপ, যাঁর পরম পিয়ারের এ জীব-জগৎ, এ সৃষ্টির উপর তাঁর বাৎসল্যের উত্তাল
No comments:
Post a Comment