কাজে তেমন হবে। তবে এ-কথা স্বীকার্য যে, প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তির অভ্যাসে অনেকটা কষ্ট আছে ও শ্রম আছে; সে কষ্ট ও শ্রম কেমন জান? মনে কর, আমি কলকাতায় পাথুরিয়াঘাটায় থাকি। এ স্থানের উত্তরে তিন ক্রোশ দূরে দক্ষিণেশ্বর আর দক্ষিণে তিন ক্রোশ দূরে মেটিয়াবুরুজ। মেটিয়াবুরুজের পথ যেন প্রবৃত্তির পথ আর দক্ষিণেশ্বরের পথ যেন নিবৃত্তির পথ। আমি মেটিয়াবুরুজের পথে গিয়ে সেখানে হাজির। ভুক্তভোগী হয়ে এখন বুঝেছি, এ অতি অশান্তির স্থান। শান্তির স্থানের অনুসন্ধান করায় বুঝলাম দক্ষিণেশ্বর যাওয়া বই আর উপায় নেই। এখন আমায় কি করতে হবে? মেটিয়াবুরুজ থেকে পুনরায় পাথুরিয়াঘাটায় আসতে হবে। এ ফেরত পথে আমাকে হাঁড়ির হালে পড়তে হবে। এখানে বড় কষ্ট, বড় শ্রম। পরে যখন পাথুরিয়াঘাটা থেকে উত্তরে দক্ষিণেশ্বরের পথে যেতে আরম্ভ করব, তখন শান্তির সঞ্চার হবে। পথে যতই অগ্রসর হব, ততই শান্তি বৃদ্ধি পাবে। এ পথেও যেতে যেতে সাবেক সংস্কারবশতঃ মন বার বার মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলের তরঙ্গে ফেলবে, কিন্তু এতে ভাল বই আর মন্দ হবে না। কণ্ঠস্থ অর্থ ভুলে গিয়ে অন্য অর্থ মুখস্থ করায় যেরকম কষ্ট, উদরস্থ ভোজ্য উদ্গীরণ করে পাকস্থলীকে অন্য ভোজ্যধারণের উপযোগী করায় যেমন কষ্ট, প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তিতে আসা তেমনি কষ্ট। আর একটি কথা, নিবৃত্তির পথে অগ্রসর হলে যতই কষ্ট আসুক না কেন, এতে পথিককে উদ্দিষ্ট পথে অগ্রগামীই করে থাকে। সে কষ্ট যাতনা শ্রম তার পক্ষে মহাকষ্ট, মহাযাতনা ও মহাশ্রমের রক্ষাকবচ। পথিকের অবস্থায় না পড়লে পর্যটনের বিষয় যেমন ভাল উপলব্ধি হয় না, সেরূপ কর্মক্ষেত্রে না এলে এ-সকল বিষয়ের জ্ঞান জন্মে না। তাই ঠাকুর বলতেন - সাধনসাগরে না ডুব দিলে রতন মেলে না। কর্ম কর, কর্ম চাই - সিদ্ধি সিদ্ধি বলে চেঁচালে নেশা হয় না। সিদ্ধি আনা
No comments:
Post a Comment