Thursday, March 29, 2018

১০৫

সঙ্কল্প আছে, সঙ্গ আছে ও কাজ আছে। তবে প্রবৃত্তির পথে যে ভাবের সঙ্কল্প, সঙ্গ ও কাজ, নিবৃত্তির পথে সেগুলি ভিন্ন প্রকৃতির, এ মাত্র প্রভেদ।

মনের কথায় বলেছি, মনের স্বভাব - একটা বিষয়ে সে ষোল-আনা মাতোয়ারা; মাছের পক্ষে যেমন জল, তেমন বিষয় ব্যতীত তার প্রাণ বাঁচে না; কিন্তু যদি একবার কোন উপায়ে তাকে বিষয় থেকে ভগবদ্-বিষয়ে ফিরিয়ে দিতে পার, তাহলে পূর্ব-বিষয়ে আর যেতে চাইবে না। ঘোর প্রবৃত্তির পথ থেকে একবার ঘুরিয়ে নিবৃত্তিতে নিয়ে এলে আর প্রবৃত্তিতে যাবে না। যদিও অনেক কালের স্বভাববশতঃ এক একবার যায়, কিন্তু সে তখনি ফিরে আসবে, আর নিবৃত্তির পথে তিনগুণ বলে অগ্রসর হবে। দেখলে বোধ হবে যেন প্রবৃত্তির পথে একবার গিয়েছিল কেবল খানিক গায়ে জোর বাড়াবার জন্য।

পা। জোর বাড়াবার কথাটা বুঝতে পারলাম না - ভেঙে বলুন। যে পথে গেলে মহাবল বলহীন হয়, সেখানে গিয়ে বল বা জোর বাড়বে কি করে?

ভ। তুমি কখনো কাউকে নালা কি বড় খানা ডিঙুতে দেখনি? যদি কোন লোককে একটা খাল লাফিয়ে এ-পার থেকে ও-পারে যেতে হয়, তাহলে দৌড়ে এসে করে। প্রথমে সে খানিক পিছু দিকে হটে যায়, তারপর সেখান হতে দৌড়ে এসে খালটা কুঁদে লাফিয়ে পড়ে। এখানে যেমন পেছিয়ে যাওয়া পায়ে জোর-সঞ্চারের জন্য, ওখানেও তাই। তবে খাল-পারের সময় স্বেচ্ছায় পেছু হটে যাওয়া আর এখানে ভ্রমবশতঃ যাওয়া - এটুকু তফাত। কাজ করতে করতে এ-সকল বিষয় স্বতই বুঝা যায়। অবস্থায় না পড়লে এ-সব তত্ত্বের উপলব্ধি হয় না। কাজ করা একান্ত প্রয়োজন। কাজের দ্বারাই প্রবৃত্তিতে যাওয়া হয়েছে আবার কাজের দ্বারাই নিবৃত্তিতে ফিরতে হবে। প্রবৃত্তি - প্রবৃত্তির কাজে যেমন হয়েছে, নিবৃত্তিও - নিবৃত্তির

No comments:

Post a Comment