Thursday, March 29, 2018

১১১

আগুনে হাত দিও না, তুমি আগুনে হাত দিচ্ছ, পুড়বে না তো কি? তিনি ভাল-মন্দ বিশেষভাবে দেখিয়ে দিচ্ছেন, বলে দিচ্ছেন; তুমি আপন ইচ্ছায় ভালর দিক দিয়েই যাবে না, কেবল মন্দেরই সঙ্গে থাকবে। সুতরাং তোমার রোগ, শোক, অভাব ইত্যাদি অবশ্যম্ভাবী ভোগ্য। যে যেমন জন্তু তার সাহচর্যে তুমি তারই যা আছে, তাই পাবে। সাপের কাছে থাক - বিষ পাবে; কামধেনুর কাছে থাক ক্ষীর পাবে। কামিনী-কাঞ্চন সাক্ষাৎ মূর্তিমতী অবিদ্যা-সর্পিনী, তুমি সর্বদাই তার চিন্তায়, তার সঙ্গে আছ, সুতরাং রোগ, শোক, দুঃখ বই আর কি পাবার প্রত্যাশা করতে পার? সর্বসন্তাপনাশিনী কামধেনুরূপা জগন্মাতার চিন্তায় ও সঙ্গে থাক, অবশ্যই শান্তি-ক্ষীর পাবে।

একটা কথা শোন - বেদ, বেদান্ত, তন্ত্র, মন্ত্র, গীতা, পুরাণাদি এই যে শাস্ত্রের মহৎ ভাণ্ডার - এ কি জান? এগুলি সব ভগবদ্বাক্য, এসব তাঁর নিজের শ্রীমুখের উক্তি। এ যাবতীয় শাস্ত্রের মধ্যে তিনি কেবল একটি কথা বলেছেন - সে কথাটি এই, "হে জীব, তুই যাতে সুখে থাকিস, তাই কর, আমি তাহলেই খুশি।"

ভগবান শ্রীমুখে বলছেন একথা, কিন্তু তাঁর সৃষ্টিকৌশলে এমন একটি ফিকিরকল করে রেখেছেন যে, জীব নিজের সুখের কি মঙ্গলের কাজ করতে গেলেই ভগবানের আরাধনা, তপস্যা বা সাধনা ভিন্ন অন্য কোন কর্মপথেই তার সুখ কি মঙ্গলের আশা নেই; সুতরাং জীবকে বাধ্য হয়ে তাঁর সেবা, আরাধনা ও সাধন করতে হয়। সৃষ্টির মধ্যে একমাত্র ভগবান বই আর কিছুতেই শান্তি-সুখের আশা নেই।

কিন্তু হতভাগ্য জীব এমন দিশেহারা, এমন কানা, এমন বধির যে, সে গিলটির কাম-কাঞ্চন ছাড়া সাক্ষাৎ কাঁচা-সোনা ভগবানের দিক দিয়েই যাবে না, সে-রূপই দেখবে না, তাঁর কথাই শুনবে

No comments:

Post a Comment