না। জীব একান্ত বেবাগ হলে দয়ার সাগর স্বয়ং মূর্তি ধরে মানুষের মতো হয়ে বাগ মানাতে আসেন; তবু কি চোখ চেয়ে দেখে? ভগবান দয়ার ভরে অস্থির; সুতরাং তাঁকে নিজের দায়ে জীবের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বাগ মানাতে যেতে হয়, তখন জীব ভগবানকে না-ছোড়-বান্দা দেখে কি করে জান? ভগবানকে পাগল জ্ঞানে হেসে উড়িয়ে দেয়। ভাই, জীবের তাঁর কথায় জিব বেরিয়ে পড়ে। বুঝ, এর নাম জীব! দেখ, এই জীবের বুদ্ধি! এদিকে ঐ বুদ্ধিতে আকাশে উড়ছে, দু-বছরের পথ তিন দিনে যাচ্ছে, এ দেশ থেকে অপর দেশে পাঁচ মিনিটে খবর পাঠাচ্ছে, মহাবল পাঁচটা ভূতকেই ক্রীতদাসের মতো হুকুমে খাটাচ্ছে, অঙ্গহীনের অঙ্গ করে দিচ্ছে আর কত শত অদ্ভুত কাজ করছে। বুদ্ধির চোটে গোটা পৃথিবী থরথরি কম্পমান, কিন্তু ঈশ্বরের বিষয়ে এলেই সেই বুদ্ধি একেবারে ডিগবাজী খেয়ে পড়ে। তেলির ছেলেকে লাঙলে কোদালে কাস্তেতে দেখতে পাবে যেন সাক্ষাৎ ভীম, কিন্তু ক খ শিখবার বেলায় আর তার বুদ্ধি বেরোয় না; যদি কিঞ্চিৎ বেরোয়, সেটা যেমন হোরমিলার কোম্পানির গাধাটে ভড়, মোলেও এগুতে চায় না! ঈশ্বর-প্রসঙ্গ বা ঈশ্বর-তত্ত্বে জীবের বুদ্ধিও এ রকমের।
জীব নিজের মঙ্গল, নিজের সুখ কিসে আছে, তা চিনতে পারে না। যখন সুখের কারণ জানতে পারে, তখন দুনিয়ার যাবৎ বস্তু ছেড়ে দিয়ে সেই ভগবানের মধ্যে, সেই ভগবানের সঙ্গে বাস করতে প্রয়াস পায়। সংসারের কোন বস্তুতে কেহ কখনো কিছু সুখই পায় না - যাবতীয় পুরাণ তার সাক্ষী। সংসারকে সুখের আকর জ্ঞানে যে এর আশ্রয় নিয়েছে, সেই শেষে প্রাণে সারা হয়ে গেছে। সংসার কেমন জান? যেমন কলাই-ভাঙা জাঁতা। জাঁতার মধ্যভাগে একটি কাঠের কীল আছে, যে কলাই-দানাটি সেই কীলের কাছে থাকে, সে আর ভাঙা যায় না, বাকি যত দানা সব ভাঙা যায়,
No comments:
Post a Comment