রামকৃষ্ণদেব অন্তর্যামী - প্রত্যেক জীবের হৃদয়ে আছেন। যে-কোন রূপে বা যে-কোন ভাবে সরল অন্তরে ভগবানের চিন্তা যিনি একবার করেছেন, তাঁকে রামকৃষ্ণদেবের কাছে আসতে হয়েছে ও হবে। রামকৃষ্ণদেবও বার বার ভাবাবেশে বলেছেন, যে-ব্যক্তি সরল প্রাণে একবার তাঁর চিন্তা করেছে, তাকে এখানে আসতে হবে।
পা। যে-ব্যক্তি রামকৃষ্ণরূপ ভিন্ন অন্য রূপের আকাঙ্ক্ষী, রামকৃষ্ণদেব তাকে নিজের কাছে আকর্ষণ করে নিয়ে গিয়ে কি করেন?
ভ। প্রথমতঃ তিনি ভক্তের অভিলষিত রূপের কথা, তাঁর গুণের কথা, লীলার কথা প্রকাশ্যে ও গোপনে সেই ভক্তকে শুনাবেন। এতে কি কাজ করা হয় জান? সেই ভক্তের অভিলষিত রূপে অধিকতর ব্যাকুলতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর ঠাকুর যখন দেখেন, ভগবানের উপর এবারে খুব টান বেড়ে গেছে তখন ভক্ত যেখানে যেতে চান, যে-রূপ দেখতে চান, সেখানে সঙ্গে নিয়ে সেই সাধের রূপটি দেখিয়ে দেন। এখন তিনি পথে কোন প্রকারেই জানতে দিবেন না যে ভক্তের অভিলষিত রূপটি রামকৃষ্ণদেবেরই নিজের অন্যবিধ রূপ। এমন ধারা খেলা করেন কেন জান? রামকৃষ্ণদেব কারও ভাব নষ্ট করেন না। যে কৃষ্ণ ভালবাসে, তার কাছে কেবল কৃষ্ণকথা, কৃষ্ণলীলার মাধুরী-বর্ণন ও প্রদর্শন, কৃষ্ণসঙ্গীত; যে কালীরূপ ভালবাসে তার কাছে খালি কালীকথা, শ্যামাসঙ্গীত।
যে নিরাকারবাদী, তার কাছে চূড়ান্ত বেদান্তের কথা; সগুণবাদীর কাছে সগুণের কথা, আর নির্গুণবাদীর কাছে নির্গুণের কথা। রামকৃষ্ণদেবের ভাব - যে-কোন রূপে বা যে-কোন ভাবে ভগবদনুরাগী হলেই হলো। যে যে-রকমে, যে-ভাবে, যে পথে যাক না কেন, সেই একজনের কাছেই পৌঁছবে। ঠাকুর রামকৃষ্ণের এই সর্ববাদিসম্মত, অসাম্প্রদায়িক, সার্বভৌম, বিশ্বজনীন ভাবের মাধুর্যে তাঁর নিকটে
No comments:
Post a Comment