Thursday, March 29, 2018

১২৬

পরিমিত অস্থিচর্মে গড়া মানুষ মাত্র। তুমি জান যে, এ দেহটিই 'আমি'; কিন্তু তা নয় - তুমি দেহ ছাড়া অর্থাৎ দেহ ও তুমি আলাদা। এ দেহের ভিতরে একটা মন রয়েছে; ঐ মন দিবানিশি সঙ্কল্প-বিকল্প করছে। ঐ একটি মন কখনো কখনো দুটি হয়ে পরস্পর ঝগড়া করে; আবার সেই ঝগড়া-নিষ্পত্তির জন্য অন্য একজন বিবাদ-ক্ষেত্রে উদিত হয়; এ সওয়ায় চিত্ত, বুদ্ধি, অহঙ্কার, জীবাত্মা, পরমাত্মা, কামক্রোধাদি ছয় রিপু এ দেহে রয়েছে ও কাজ করছে; এ-সকল যাবতীয় তত্ত্ব বহু পূর্বে তোমাকে বলেছি। এ-সব অবাক রঙ্গ দিবানিশি দেহে রয়েছে, কত কি খেলা করছে, মানুষ কিন্তু কিছুই টের পায় না।

এ সওয়ায় আরও কত অকথ্য বস্তু দেহের মধ্যে রয়েছে - তুমি কি তাদের বিষয় কিছু বুঝতে পারছ, না তাদের দেখতে পাও? পুতুলওয়ালা যেমন নানা কলে কৌশলে পুতুলগুলিকে নাচায়, মা রঙ্গময়ী জীবের দেহের মধ্যে সাতসতেরগণ্ডা জিনিস দিয়ে নিজের ইচ্ছামত সকল দেহীকেই খেলাচ্ছেন। দেহীদের ভিতর দিয়ে তিনি সৃষ্টির সকল খেলা খেলিয়ে নেন; তারিফ এটি যে, তাঁর রঙ্গকৌশলে দেহীদের তার কিছুই জানতে দেন না; তবে যে আধারে মা প্রসন্ন হয়ে চৈতন্য দেন, সে আধার এ সকল খেলা দেখতে পায়।

অবাক রঙ্গ - এ সৃষ্টিতে প্রত্যেক দেহে এক একটি 'আমি' রয়েছে এবং প্রত্যেকেই অহঙ্কারে 'আমি আমি' রবে গগন ফাটাচ্ছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে 'আমি' বলে এত লক্ষ কোটি 'আমি' নেই। 'আমি'-দের স্থলে যিনি আছেন, মায়ের প্রসন্নতালাভ বিনা তাঁকে দেখবার উপায় নেই।

লোকে বলে - তার অনেক পরিচিত লোক আছে অর্থাৎ সে তাদের চেনে, কিন্তু বাস্তবিক সে কাকেও চেনে না বা জানে না, এমনকি সে তার মা, স্ত্রী, পুত্র, পরিবারদিগকেও চেনে না - সে নিজেকেও

No comments:

Post a Comment