Thursday, March 29, 2018

১৩৭

করে বুঝিয়েছেন; সেটি এই - রামচন্দ্র একদিন হনুমানকে জিজ্ঞাসা করলেন, "হে হনু! তুমি আমাকে কি রকম দেখ?" তাতে হনু বললেন, "হে রাম, আমি তোমাকে কখনো দেখি - তুমি প্রভু, আমি দাস; কখনো দেখি - তুমি বৃহৎ অগ্নি, আমি তার একটি ফিনকি, আবার কখনো দেখি - তোমায় ও আমায় কোন ভেদ নেই।" হনুমানকে রামচন্দ্র তাঁর সকল ভাবই দেখালেন। হনুমান কিন্তু অন্য ভাব দুটিতে লক্ষ্য না রেখে সেব্য-সেবকের ভক্তিভাবেই রইলেন। ভক্তিভাবের মধুর আস্বাদন একবার জানলে কি পেলে, কেউ আর অপর কোথাও যেতে কি থাকতে চান না। দেবর্ষি নারদেরও এ ভাব। জ্ঞানী ও যোগীর তুলনায় ভক্তদের কোটিগুণ কষ্ট আছে, কিন্তু এমনি ভক্তের জাত যে, ভক্তির লোভে জেনেশুনেও যাবতীয় কষ্টকে গায়ের অলঙ্কার করে রাখে। উদ্ধব বৃন্দাবনে গোপীদিগকে যোগতত্ত্ব বললেন, কিন্তু কেউ সে-কথা কানেও নিলে না। কৃষ্ণবিরহে গায়ের চামড়া পুড়ে গেল, সোনার কান্তি অঙ্গারবৎ হলো, কেঁদে কেঁদে অন্ধ হলো, তবু কেউ একবার চোখ মুদলে না। মিছরির রস খেলে যেমন ঝোলাগুড়ে মোটেই মন হয় না, তেমনি চোখ চেয়ে যে একবারও ভগবানকে সম্ভোগ করেছে, সে মরে গেলেও আর চোখ মুদে দেখতে চায় না। ভাই, বলিহারি ব্রজের ভাব - যোগের আনন্দ, ব্রহ্মানন্দ তার কাছে কিছুই লাগে না!

হায়রে তপস্বী মহাঋষি মুনিগণ।
ত্রিভুবন-সর্বজন-আরাধ্য চরণ॥
আজীবন অনশন তরুতলে বাস।
অবিরত নানা ব্রত কঠোর সন্ন্যাস॥
প্রয়াস কেবলমাত্র তুচ্ছ ধন হেতু।
ত্রিতাপ-সন্তাপ-ভয়ে হয়ে অতি ভীতু॥

No comments:

Post a Comment