গণনাতে অনন্ত; আবার ঐসকল থোলোও গণনাতে অনন্ত। একটি থোলোর একটি কৃষ্ণ এসে বৃন্দাবনে লীলা করেছিলেন, একটি থোলোর একটি রাম এসে অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এক একটি মূর্তি, মূর্তিতে অনন্ত হয়েও প্রত্যেকের মধ্যেই পূর্ণ-ব্রহ্মত্ব বিরাজমান। ভগবান একাধারেও যেমন অনন্ত, অনন্তাধারেও তেমনি অনন্ত। আমরা যেমন ক্ষুদ্র জীব, আমাদের আধারও তদনুযায়ী ক্ষুদ্র, সে অনন্তের ভাব কেমন করে বুঝাব বল? সেজন্য রামকৃষ্ণদেব বলতেন, এক সের ঘটিতে কি পাঁচ সের দুধ ধরে?
শেষ কথা - যিনি সাকারে, তিনিই নিরাকারে। যাঁর সাকার তাঁরই নিরাকার। সাকার নিরাকার দুই-ই তিনি। এ দুই ছাড়া আরও যা কিছু আছে, তাও তিনি। একটি বই তো আর দোসরা জিনিস নেই; সুতরাং যতই রকমারির কথা শুনেছ, যত রকমারি দেখেছ, সব সেই তাঁর, সকলেই সেই তিনি। যিনি আধার, তিনিই আধেয়। যিনি অদ্বৈত, তিনিই দ্বৈত। দ্বৈতাদ্বৈত দুই সে একেরই খেলা।
যে ভাগ্যবান জীব ঠিক ঠিক দ্বৈতবাদী, তিনিই ঠিক ঠিক অদ্বৈতবাদী। প্রকৃত দ্বৈতবাদীতে ও প্রকৃত অদ্বৈতবাদীতে কোন প্রভেদ নেই। অনন্তের মধ্যে সেই একের খেলা যিনি দেখতে পেয়েছেন, তাঁরই ঠিক অদ্বৈতজ্ঞান হয়েছে। বহুতে একের সত্তা - এ বোধকে অদ্বৈতজ্ঞান বলে। এ জ্ঞানার্জনে জীব শিবত্ব-অবস্থা অর্থাৎ দেবদুর্লভ অবস্থা প্রাপ্ত হয়; তাই রামকৃষ্ণদেব বলতেন, 'অদ্বৈতজ্ঞান আঁচলে বেঁধে যা ইচ্ছা তাই কর।'
'যা ইচ্ছা তাই কর' - তার মানে এবংবিধ অদ্বৈতজ্ঞান-বিশিষ্ট ব্যক্তি যা তা করতে পারেন না, অর্থাৎ তিনি যা করেন, তা তাঁর ঠিক কার্য করা হয়, কেন না তাঁর আর বেতালে পা পড়বার জো নেই।
ভগবানের আশ্চর্য খেলা, সে খেলাও আবার অনন্ত; তুমি যতকালই খেলা দেখ না কেন, সেই খেলা ক্রমাগতই অনন্ত বলে পরিলক্ষিত
No comments:
Post a Comment