Thursday, March 29, 2018

১৩৪

তাঁয় তন্ময় হতেন, তাঁর লোকের দুয়ারে দীন ভিখারির মতো সশঙ্কচিত্তে যাবার প্রয়োজন কি? এর কারণ যদি জানতে চাও, তাহলে আকাশপানে ঐ মেঘগুলিকে চেয়ে দেখ। এই বর্ষাকাল, মেঘগুলিকে ডাকতে হয় না, আপনি ব্যাকুল হয়ে চারদিকে ছুটে বেড়াচ্ছে; কেন জান? জল দিয়ে উত্তপ্ত ধরণীকে তাপ থেকে রক্ষা করবার জন্য, শুধু ধরণীকে শীতল করা নয়, আবার তাকে শস্যশালিনী করবার জন্য। ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবেরও এই মেঘের দশা - অপার করুণাসিন্ধু দয়াবতার - মেঘ যেমন জলভারে চঞ্চল, ঠাকুরও তেমনি করুণার ভারে চঞ্চল। ব্যাকুল প্রাণে দিগ্বিদিক-জ্ঞানশূন্য হয়ে দুয়ারে দুয়ারে এখানে সেখানে ঘুরছেন - একমাত্র উদ্দেশ্য ঈশ্বরতত্ত্বরূপ শীতল শান্তিদানে ত্রিতাপ-সন্তাপ থেকে জীবকুলকে রক্ষা করা। তাঁর দয়ার ইয়ত্তা নেই; দয়ার তিলের তিল অনুভব করবার মানুষের শক্তি নেই। ঠাকুরের দয়ার কথা শোন - তাঁর দেহখানি যেমন দয়ার্দ্র, তেমনি কষ্টসহিষ্ণু। দয়া ও কষ্টসহিষ্ণুতার বিষয় যদি দেখতে চাও তাহলে এ সর্বসহ মাটির পানে তাকিয়ে দেখ - কঠোর লোহার কোদালে, লাঙলে নানা উপায়ে খুঁড়ছে, কাটছে, সে যেমন একবারও রুষ্ট হয় না, কিছু বলে না, বরং তার বদলে নানা দ্রব্য দিয়ে লোকের পরম উপকার করে; ঠাকুরও তদ্রূপ, কত লোক কত কটুকাটব্য বলছে, কত লোক কত রকমে শ্রীঅঙ্গের উপর অত্যাচার করেছে, কত শত অসদ্ব্যবহার করেছে, তিনি কিন্তু তাদের মঙ্গল-বিধানে ও সাধনে সর্বদাই তৎপর ও ব্যাকুল। তাঁর শ্রীদেহটি কেমন ছিল তা তোমাকে বলেছি; তার উপর অতি সামান্য অনিয়ম কি অত্যাচার হলে তিনি সহজেই অসুস্থ হতেন। একবার ভারি পেটের পীড়া - অন্ন ত্যাগ করতে হলো, দিনের মধ্যে একবার মাত্র অতি অল্প জলসাগু; এমন অবস্থায়ও তাঁর এখানে ওখানে যাবার বিরাম নেই। তাঁর কাছে একজন তপস্বী থাকতেন; তিনি হাজরা নামে পরিচিত। হাজরা

No comments:

Post a Comment