Thursday, March 29, 2018

১৩৫

একদিন ঠাকুরকে বুঝালেন - তুমি সিদ্ধ পুরুষ, মুক্ত পুরুষ, সমাধিপরায়ণ। তাঁয় তন্ময় হয়ে থাক না কেন? পীড়িত শরীর, এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াবার দরকার কি? ঠাকুর বালকের মতো, যে যা বলে তাই তখনি বিশ্বাস করেন; হাজরার কথা শুনে মনে করলেন - তাই তো বটে, আমার ছুটাছুটি করবার আবশ্যক কি? এই ভাবতে ভাবতে পঞ্চবটীতে গিয়ে হাজির। সেখানে গিয়েই একেবারে কেঁদে অস্থির এবং দ্রুতপদে তখনি ফিরে এসে হাজরাকে বললেন - ওরে শালা, আমি তোর কথা শুনব না, জলসাগু খেয়েও দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে পরের উপকার করব। এখন বুঝ দেখি, ঠাকুরের দয়ার পসার কতখানি, এ দয়ার ভাব কি মানুষের মাথায় আসে? মানুষমাত্রেই ঘোর স্বার্থপর, বিনাস্বার্থে অতি সামান্য কাজও করে না; সুতরাং স্বার্থপর হৃদয়ে দয়া থাকা দূরে থাক দয়ার মহিমা এমন কি তার আভাস পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না।

এ কাল গুরু-হারা কাল, এ কালে ভগবানের বিষয় চিন্তা করা দূরে থাক, তিনি যে আছেন, এ বিশ্বাসই মানুষের ঘটে নেই। কোটির মধ্যে দু-এক জন যাঁদের এ বিশ্বাস আছে, তাঁরা পাকা বুঝে রেখেছেন যে, জীবের ভগবান-লাভের কোন উপায় নেই; তবে পুরাণাদিতে কি প্রাচীন সাধু-ভক্তের মধ্যে যে ভগবান-লাভের কাহিনী শুনতে পাওয়া যায়, সে কোন্ কালের কথা! কখনো কার কি হয়ে গেছে, তা ধর্তব্য নয়। এখন আর সে দিন নেই। এবংবিধ কোটি কোটি মানুষের মধ্যে দু-এক জন যাঁরা অপেক্ষাকৃত উন্নত, তাঁরা বড়জোর কর্মকাণ্ড পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন। এই তো কালের গতি - এমন সময় ঠাকুরের অবতরণ। ঠাকুর অবতীর্ণ হয়েছেন আবার কেমনভাবে? একেবারে বাহ্যৈশ্বর্যবিহীন - লোকে যে ধরবে, তার কোন কিছুই নেই। অতি সরল, অতি সোজা, অতি দীন-বেশ। যিনি জ্ঞানীর ব্রহ্ম, যোগীর আত্মা, ভক্তের ভগবান, যিনি সৃষ্টি-প্রসবিনী

No comments:

Post a Comment