Thursday, March 29, 2018

১২২

ভিন্ন ভাবে, ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতিতে ও পদ্ধতিতে সেই একেরই উপাসনা কচ্ছেন। দ্বিতীয় কারণ, যিনি ঠিক ঠিক উপাসক, তিনি একমনে আপনার ভাবেই মত্ত থাকেন, অন্যদিকে লক্ষ্য করবার অবকাশ পান না। সাগরের তীরেই যত শব্দ, সাগরের ভিতরে প্রবেশ করলে আর শব্দ থাকে না, ঠিক তেমনি ঈশ্বর-পথের বাইরে যাবতীয় কোলাহল; সেখানে প্রবেশ করলে আর গোলমাল থাকে না। ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের মতে সাকার-উপাসনার প্রতিবাদ করা ঘোর অজ্ঞানের কাজ। ঈশ্বর-পন্থীদের পরস্পর বিবাদ-ভঞ্জন করবার জন্য, ঠাকুর রামকৃষ্ণের অবতরণ; এটি তাঁর লীলার প্রতি ছত্রে ও প্রতি অক্ষরে স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে।

কূট তৰ্কবুদ্ধি, কি কূট বিচারবুদ্ধি দ্বারা ভগবানের সাকারবাদের প্রতিবাদ করা নিষ্প্রয়োজন। এ কূটবুদ্ধির অন্য নাম ঘোর সন্দেহ। সরল-মতি ব্যক্তিদের এরূপ সন্দেহ ঘটলে গুরুপদে আশ্রয় গ্রহণ করা শ্রেয়। গুরু-বাক্যে নিষ্ঠাই এবংবিধ সন্দেহরূপ বিষবৃক্ষের কুঠারস্বরূপ। শ্রীগুরুপদানুরক্ত পূর্ণ-মনোরথ ভক্তিমানেরা এই সন্দেহকে ভবব্যাধি বলেন। অনেকে আবার বলেন, এ সন্দেহই সেই ভীষণ তমঃ, যা ভগবানকে জীবের চক্ষু থেকে একেবারে আড়াল করে রাখে। যে হৃদয়-মুকুরে ভগবানের রূপ প্রতিবিম্বিত হয়, সেই মুকুরখানিকে এ সন্দেহ মলিন করে রাখে। সদ্গুরু-সংসর্গে ও তাঁর কৃপায় সূর্যোদয়ে আঁধারের ন্যায় তমঃ দূরীভূত হয়। ঠাকুর রামকৃষ্ণের কাছে এটি আমি প্রত্যক্ষ দেখেছি।

কত দেশ বিদেশ থেকে ঠাকুরের কাছে সময়ে সময়ে কত দিগ্বিজয়ী বড় বড় শাস্ত্রবিদ্ পণ্ডিতেরা আসতেন। প্রথমতঃ তাঁরা ঠাকুরের সঙ্গে বিদ্যাভিমানে মত্ত হয়ে ভয়ঙ্কর বাক্যচ্ছটা সহকারে ঈশ্বর-তত্ত্ব বিষয়ে এমন তর্ক-বিতর্ক, বাদ-প্রতিবাদ করতেন এবং ঠাকুরকে এমন অবস্থায় ফেলতেন যে, তিনি কি বলবেন তার পথ পেতেন না। লোকে

No comments:

Post a Comment