Thursday, March 29, 2018

১৩০

গেল, ভয়ঙ্করা তাড়কার নিপাত হলো, জলের উপর গুরুভার পাষাণ ভাসতে লাগল, কোড়ে আঙুলের উপর গিরি তুলে ধরা হলো, দুগ্ধপোষ্য শিশু দ্বারা রাক্ষসী প্রাণ হারাল, বাঁশীর গানে যমুনার জল উজান বইল, দেখতে দেখতে কৃষ্ণ কাল হলো, চতুর্মুখ পঞ্চমুখের ধাঁধা উঠল, হাতে মাথা কাটা গেল, তিন পায়ে ত্রিভুবন ঢাকা পড়ল, দাঁতে ধরণীর ভার সইল ইত্যাদি ইত্যাদি - এ বাহ্যৈশ্বর্যের খেলা; এ খেলা রামকৃষ্ণলীলার বিষয়ীভূত হয়েও বিষয়ীভূত নয়। এখানে শুদ্ধ-সত্ত্বের খেলা - যার বলে এক কথায় অন্তরের চির-ঘুমন্ত সাপ জেগে উঠল, অবাক-রঙ্গালয়ের দুয়ার খোলা পড়ল, চির-আসক্তির জিনিসে অনাসক্তি হলো, আপনার যারা পর হলো ও পর যারা আপনার হলো, মনের গতি বর্ণ ফিরে গেল, কোটি কোটি জন্মের পথ এক নিমিষের মধ্যে ফুরিয়ে গেল, ইন্দ্রিয়গুলির নূতন খোরাক জুটল, জগৎ নূতন হলো, দেহে আত্মায় পৃথক হলো, হাড়গোড়গুলি চলে বেড়াল, বেদ-পুরাণের ভাব অন্তরে আপনি ফুটল, অনন্ত কোটি জিনিস একটা হয়ে দাঁড়াল, একটা জিনিস অনন্ত রূপে বর্ণে গন্ধে রসে ও শব্দে অনন্তে পরিণত হলো, ভাল-মন্দ এক বিছানায় শুয়ে ঘুমুল, আর যে ভগবানের দুয়ার-প্রবেশে ইন্দ্র চন্দ্র বায়ু বরুণ যম ইত্যাদি ভয়ে কম্পমান, সেই ভগবান আপনার চেয়েও আপনার হলো, এ-সব রামকৃষ্ণদেবের খেলার অন্তর্গত। বাহ্যৈশ্বর্যের কাণ্ড ইন্দ্রিয়ের আয়ত্তাধীন, তাই মুখে বলা চলে, কিন্তু অন্তরৈশ্বর্যের কাণ্ড ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত হয়েও তাদের বিষয়ীভূত নয়, এজন্য বর্ণনা করা যায় না, এ হেতু আমি ক্রমাগত বারবার বলছি, রামকৃষ্ণলীলা বলবার নয়, কেবল দেখবার। রামকৃষ্ণলীলা যে তিলে তিলে বুঝছে, তার আর মুখে কথা বেরয় কি? মনে করে এ যে অবাক রঙ্গ, এ কি মুখে বলা যায়, না কাকেও বুঝানো যায়?

দ্বিতীয় কথা, রামকৃষ্ণদেব ব্যক্ত হয়ে গুপ্ত আর অতি সরল

No comments:

Post a Comment